আত্মকর্মসনংস্থানের প্রয়োজনীয়তা

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - ব্যবসায় উদ্যোগ - আত্মকর্মসংস্থান | | NCTB BOOK

নোয়াখালীর সানজিদা ইসলাম স্থানীয় কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেও যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি লাভে ব্যর্থ হন। বেশ কিছু দিন বেকার থাকার পর তিনি স্থানীয় যুব উন্নয়ন কার্যালয় থেকে ফুল চাষের উপর প্রশিক্ষণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। প্রশিক্ষণ শেষে এক একর জমিতে ফুল চাষ করেন। প্রথম মৌসুমে তার আয় হলো ৫০ হাজার টাকা। লাভের টাকা পেয়ে তার আগ্রহ বহুগুণে বেড়ে গেল। এরপর তিনি ঢাকায় গিয়ে ফুল চাষের উপর দিনব্যাপী কর্মশালায় যোগ দিলেন ও পুষ্পমেলা ঘুরে দেখলেন। এখান থেকে তিনি নতুন দেশি বিদেশি জাতের ফুলের বীজ নিয়ে চাষ করে অনেক আয় করলেন। কঠোর পরিশ্রম আর সুযোগের সঠিক ব্যবহারের কারণে তার ব্যবসায় ৫ বছরে অনেক বড় আকার ধারণ করে। তিনি সম্প্রতি তার জেলার সেরা নারী উদ্যোক্তার পুরস্কার পান। পুরস্কার গ্রহণকালে তিনি আগত সবাইকে আত্মকর্মসংস্থানের নিম্নোক্ত প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অবগত করেন—

 

  • কর্মসংস্থানকে প্রধানত তিনভাগে ভাগ করা যায়— মজুরি বা বেতনভিত্তিক চাকরি, আত্মকর্মসংস্থান ও ব্যবসায়।
  • কর্মসংস্থানের প্রধান উৎস সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে শ্রমজীবী ও চাকরিজীবী লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। কর্মসংস্থানের চাহিদা যে হারে বৃদ্ধি পায় সে হারে কর্মসংস্থানের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় না।
  • অন্যান্য পেশায় আয়ের সম্ভাবনা সীমিত। কিন্তু আত্মকর্মসংস্থান থেকে প্রাপ্ত আয় প্রথমদিকে সীমিত ও অনিশ্চিত হলেও পরবর্তীতে এ পেশা থেকে আয় বৃদ্ধির সম্ভাবনা অসীম ৷
  • বর্তমানে আত্মকর্মসংস্থানের আওতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আগের তুলনায় বর্তমানে আত্মকর্মসংস্থানে নিয়োজিত ব্যক্তিদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে ।
  • আত্মকর্মসংস্থানের সবচেয়ে বড় মূলধন হলো নিজের দক্ষতা। কর্ম সম্পাদনের জন্য যে যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল প্রয়োজন তার অর্থসংস্থান করাও অনেকটা সহজ।
  • আত্মকর্মসংস্থান একটি স্বাধীন পেশা। আর এ ব্যবসায় যেহেতু অনেক সময় নিজের বাড়িতে বা জমিতে করা যায় সেহেতু আলাদা খরচ হয় না । • আত্মকর্মসংস্থানে নিয়োজিত থাকলে তরুণ সমাজ নানা সমাজ বিরোধী কাজে লিপ্ত না থেকে সমাজ ও দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে।
  • বাংলাদেশের জনসংখ্যা বেশি হওয়ায় এখানে মজুরি অনেক কম। আবার আমাদের দেশে মৌসুমি বেকারত্বের সমস্যাও প্রকট। এসকল সমস্যা সমাধানে আত্মকর্মসংস্থান গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
  • আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে শহরমুখী জনস্রোত নিয়ন্ত্রণ ও গ্রামীণ সমাজ ও অর্থনীতির উন্নয়ন নিশ্চিত করা যায় ।
  • আত্মকর্মসংস্থানের মানসিকতা যুবসমাজকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে এবং স্বেচ্ছামূলক কাজে উৎসাহিত করে।
  • আত্মকর্মসংস্থানের জন্য বয়স কোনো সমস্যা নয়। এর মাধ্যমে যে কোনো বয়সের মানুষ তার দক্ষতা অনুযায়ী অর্থ উপার্জন করতে পারে।
Content added || updated By
Promotion